বাংলাদেশে শত শত ব্যাংক অবস্থিত রয়েছে। এর মধ্যে ডাচ বাংলা ব্যাংক অনেক বেশি পরিচিত এবং জনপ্রিয়। এই ব্যাংকটি জনগণকে বেশি সুবিধা প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রতিনিধিত্ব অনেকটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারণ জনগণদের জন্য অনেক বেশি ব্যাংকিং ব্যবস্থা সহজ হয়ে গিয়েছে। তবে ক্রেডিট কার্ড এর ব্যবস্থা থাকার কারণে জনগণ এখন বেশি সুবিধা পাচ্ছে এই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে।
এই ডাচ বাংলা বাংলাদেশ এবং নেদারল্যান্ডের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত। ডাচ বাংলা ব্যাংক আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করে ৩ জুন, ১৯৯৬ সালে। এই ব্যাংকের পরিধি পুরা বাংলাদেশ জুড়ে। আর সারা দেশে এই ব্যাংকের ৪৯০৭ টি এটিএম বুথ (দেশের সর্ব বৃহত এটিএম নেটওর্য়াক) রয়েছে। ধরুন আপনার একটি ডাচ বাংলা ব্যাংকের একাউন্ট রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ড সংগ্রহ করতে পারেননি।
ডাচ বাংলা ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা
বাংলাদেশের হাজারো ব্যাংকিং ব্যবস্থার মধ্যে ডাচ-বাংলা ব্যাংক অনেক বেশি পরিচিত এবং জনপ্রিয়। তবে সব ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে বেশ কিছু যোগ্যতা থাকতে হয়। তবে সকলেই চাইলে এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড পেতে পারেনা। একমাত্র চাকরিজীবীদের জন্য এই ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড দিতে বেশি আগ্রহ প্রদান করে থাকে। এবং বড় বড় ব্যবসায়ীরা এই সকল ক্রেডিট কার্ড অনায়াসে ব্যবহার করতে পারেন।
তবে কি যোগ্যতা থাকলে আপনি ডাচ বাংলা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড পাবেন তা অবশ্যই আপনার জেনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তবে সাধারণ ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি ক্রেডিট কার্ড সংগ্রহ করতে চাইলে তার সর্বনিম্ন যোগ্যতা একটি নির্দিষ্ট চাকরি থাকতে হবে। অথবা বড় কোন ব্যবসায়ী থাকতে হবে। অতএব যোগ্যতার মধ্যে নিচের তথ্যগুলো আপনার অবশ্যই থাকতে হবে। যেমনঃ
- ডাচ বাংলা ব্যাংকে আপনার একটি একাউন্ট থাকতে হবে।
- চাকরিজীবী হলে সর্বনিম্ন ৬ মাসের ব্যাংকের বিবৃতি দেখাতে হবে। এবং সর্বনিম্ন ৩০ হাজার টাকার বেতন প্রতি মাসে থাকতে হবে। এছাড়াও চাকরিজীবী ব্যক্তির আইডেনটিফিকেশন নাম্বার বা টিন সার্টিফিকেট, দুই কপি ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র, রেফারেন্স ইত্যাদি যথাযথ প্রদান করতে হবে।
- আর যদি কোন ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বয়স হতে হবে অন্তত এক বছর। এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় পরিচয়পত্র, দুই কপি ছবি, ট্রেড লাইসেন্স ও রেফারেন্স।
- আর অন্যান্য পেশার হলে, সেই যে পেশায় নিয়োজিত আছেন সে পেশার যথাযথ প্রমাণাদি প্রমাণ করতে হবে। এছাড়াও ঐ ব্যক্তির লাগবে দুই কপি ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র, বিদ্যুৎ কিংবা গ্যাস বিলের কপি ও রেফারেন্স।
উপরিউক্ত তথ্যগুলোই হচ্ছে এক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা। উপরে উল্লেখিত কোন একটি যোগ্যতা আপনার না থাকলে ক্রেডিট কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন না।
ডাচ বাংলা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা কি কি
যদি ডাচ বাংলা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের বিভিন্ন সুবিধা পেতে চান তাহলে অবশ্যই এই ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। এবং অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পর নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে আবেদন করলেই আপনি এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে সুবিধা অনুযায়ী অনেক একটি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ করে থাকেন। এ ব্যাংকের সব থেকে বড় সুবিধা হচ্ছে ১০ টি ক্রেডিট কার্ড পাওয়া যায়।
- সর্বনিম্ন ইন্টারেস্ট রেট মাসিক ১.৫% মাএ
- ATM চার্জ ফ্রি
- সব জায়গায় ATM বুথ
- ১ম বছর কার্ডের চার্জ ১০০% ফ্রি
- বাৎসরিক ৫০,০০০ টাকা খরচে কার্ড চার্জ ১০০% ফ্রি
- বাৎসরিকা ২৫,০০০ টাকা খরচে কার্ড চার্জ ৫০% ফ্রী
- সারা বিশ্বে ব্যবহারের সুবিধা
- ক্যাশ ইউড্রয়াল এ প্রতি ১০০০ টাকায় ৫০ পয়সা ইন্টারেস্ট প্রতিদিন
- ফ্রিতে নগদ উত্তোলন ও তহবিল স্থানান্তর সুবিধা।
- জিরো লেট পেমেন্ট ফ্রী ও নগদ তোলার সুবিধা।
- লেনদেন সতর্কতার এসএমএস।
- গোল্ড ক্রেডিট কার্ড হোল্ডারদের জন্য রিওয়ার্ড প্রোগ্রাম।
- হিডেন কোন চার্জ নেই।
ডাচ বাংলা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড লিস্ট
বাংলাদেশের অবস্থিত ব্যাংকের তুলনায় ডাচ বাংলা ব্যাংকের সুবিধা অনেক বেশি এবং ক্রেডিট কার্ড অনেক বেশি। অনেকে ধারণা করে থাকেন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড শুধু উচ্চবিত্তদের জন্য। কিন্তু এই ধারণাটি ভুল, dutch bangla bank অনেকগুলো ক্রেডিট কার্ড তৈরি করেছেন মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্তদের জন্য। অর্থাৎ ব্যক্তিরা চাইলেও একটু ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক ডাচ বাংলা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের লিস্ট সমূহ।
- Master Titanium Card
- Visa Platinum Card
- Visa Classic Local Credit Card
- Visa Gold Local Credit Card
- Visa classic International Credit Card
- Visa gold International Credit Card
- MasterCard GoldLlocal Credit Card
- MasterCard Classic International Credit Card
- MasterCard Gold International Credit Card
- MasterCard Classic Local Credit Card
আর এ ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের লিমিটেড সর্বনিম্ন ৯৯ হাজার ৯৯৯ টাকা। এবং সর্বোচ্চ লিমিট রয়েছে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ প্রত্যেকটি কার্ডের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ। এবং আলাদা আলাদা কার্ড পাওয়ার যোগ্যতার নির্দেশনাবলি রয়েছে।
ডাচ বাংলা ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার নিয়ম
আর এই সকল ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে সবথেকে সহজ মাধ্যম হচ্ছে সেখানে উপস্থিত থেকে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো জমা দেওয়া। ডাচ বাংলা ব্যাংকের শাখায় যদি উপস্থিত থাকতে পারেন সেখানে বিভিন্ন কর্মী দেখতে পারবেন। তাদের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিন। এবং নিচে দেওয়া নিয়মগুলো লক্ষ্য করুন। সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে পারলেই ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড পাবেন।
- আপনার পাসপোর্ট সাইজের এক কপি ছবি থাকতে হবে।
- ভোটার আইডি কার্ড এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কপি থাকতে হবে।
- টিন সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
- বিগত ছয় মাসের ব্যাংক লেনদেনের স্টেটম্যান্ট।
- যেটাকে জিবি হন তাহলে মূল বেতনের সনদ জমা দিতে হবে।
- আর ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্স জমা দিতে হবে।
- আপনি যেখানে বসবাস করেন সেটির প্রমাণ যদি থাকে সেটির প্রয়োজন হতে পারে।
- আপনার ভিজিটিং কার্ড এবং অন্যান্য ক্রেডিট কার্ড বিল প্রযোজ্য হলে।
উপরে উল্লেখিত নিয়ম গুলো যদি কোন একটি পালন করতে না পারেন তাহলে আপনি কখনোই ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন না।
শেষ কথা
আশা করতেছি আজকের এই আলোচনা থেকে আপনারা আপনাদের অনুসন্ধান করা তথ্য জানতে পেরেছেন। তবে আজকের আলোচনার সম্পূর্ণভাবে আপনাদেরকে ভিন্ন রকমের তথ্য জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ডাচ বাংলা ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে যদি বিস্তারিত তথ্য জেনে থাকেন এবং উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনার আশেপাশে ব্যক্তিদের কে এই পোস্ট শেয়ার করে জানিয়ে দিন। ধন্যবাদ